দেশ 

N V Ramana: ‘ সিবিআইয়ের কখনও সক্রিয়তা, কখনও নিষ্ক্রিয়তা তার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে’!: প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের কাজকর্ম নিয়ে বেশ কয়েক বছর আগে দেশের শীর্ষ আদালত খাঁচায় রাখা তোতা পাখি বলে মন্তব্য করেছিল। এখনো দেশের বিরোধী দলের নেতারাও সিবিআই সর্ম্পককে এই ধরনের মন্তব্য করে থাকেন। ভারতীয় গণতন্ত্রের সবচেয়ে দুর্বলতম দিক হলো এই সিবিআই। কেন্দ্রীয় ক্ষমতাসীন শাসকদল সবসময়ই এই সংস্থাকে ব্যবহার করে বিরোধীদের নানাভাবে হেনস্থা করে থাকে বলে অভিযোগ।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনেক কথা শোনা যেত । আজ যারা দেশের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত একদিন তারাই এই সিবিআইকে স্বাধীন সংস্থা করার দাবিতে সরব হয়েছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা তাদের রুচির বদল ঘটেছে। যারা একদিন সিবিআইকে কংগ্রেসের পোষা পাখি বলতো তারাই আজ সেই সিবিআই কে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের প্রতি নিয়ত হেনস্তা করে চলেছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

আর এই অভিযোগে খানিকটা সিলমোহর দিয়ে দিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি এনভি রামান্না। তিনি গতকাল শুক্রবার সিবিআই এর প্রথম ডিরেক্টর ডি পি কোহলির স্মারক বক্তৃতায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতি  দুঃখের সঙ্গে বলেছেন সিবিআইয়ের কখনো সক্রিয়তা এবং কখনও নিষ্ক্রিয়তা দেশের মানুষের কাছে তার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।

গতকাল প্রধান বিচারপতি সিবিআই কে স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর মত, সিবিআই, ইডি, এসএফআইও-র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে অবিলম্বে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান তৈরি করা জরুরি। আইন করে এই সংস্থা তৈরি করতে হবে। তার ক্ষমতা, কাজ, অধিকারও বলা থাকবে আইনে। একটি কমিটি এই সংস্থার অধিকর্তা নিয়োগ করবে। আলাদা আলাদা বিষয় দেখার জন্য অধিকর্তার অধীনে কয়েক জন উপ-অধিকর্তা থাকবেন।

সিবিআই অফিসারেরা যাতে শাসকের ধামাধরা না হয়ে ওঠেন, তার জন্য প্রধান বিচারপতির বার্তা, ‘‘রাজনৈতিক সরকার সময়ের সঙ্গে বদলে যাবে। আপনাদের প্রতিষ্ঠান পাকাপাকি থাকবে। আপস করবেন না, স্বাধীন হোন। নিয়মের বই মেনে চলুন।’’ ক্ষমতার বদলের পরে হেনস্থার শিকার হয়ে অনেকেই আদালতের দ্বারস্থ হন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সিবিআইয়ের অনুষ্ঠানে এসে সিবিআই সম্পর্কে প্রধান বিচারপতির এই কড়া মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই সরকার ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মধ্যে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। প্রধান বিচারপতি নিজেই তাঁর ‘গণতন্ত্র: তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা ও দায়িত্ব’ শীর্ষক বক্তৃতার শুরুতে বলেছেন, ‘‘যখন সিবিআই অধিকর্তা আমাকে আমন্ত্রণ জানাতে এলেন, আমি তখনই ওঁকে বলেছিলাম, আমাকে কিছু সমালোচনামূলক কথা বলতে হবে। আশা করি, উনি আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনেননি।’’

সিবিআইয়ের মতো তদন্তকারী সংস্থাকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে হলে তার শীর্ষকর্তাদেরই প্রধান ভূমিকা নিতে হবে বলেও মত দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রমণা। তাঁর বক্তব্য, কয়েক জন অফিসার চাইলেই হাল শোধরাতে পারবে। তবে পরিকাঠামো, কর্ম, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব, রাজনৈতিক ক্ষমতার বদলের সঙ্গে অগ্রাধিকার বদলে যাওয়া, অফিসারদের বদলির ফলেও তদন্তকারী অফিসারদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। তার ফলে দোষীরা ছাড়া পেয়ে যান, নির্দোষেরা বিপাকে পড়েন।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ